কিছুদিন আগেই ট্রান্সজেন্ডার ইস্যু নিয়ে সরগরম ছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এবার এই বিষয়ে নাটক আসায় আবারও সরগরম নেটিজেনরা। গতকাল ইউটিউবে রিলিজ দেওয়া হয়েছিল রাফাত মজুমদার রিংকু পরিচালিত নাটক ‘রূপান্তর’। আপলোডের পরপরই ‘ট্রান্সজেন্ডার’ ইস্যুতে সমালোচনার মুখোমুখি পড়ে যায় নাটকটি।
মঙ্গলবার দিনভরই আলোচনা চলে নাটকটি নিয়ে। তবে নাটকের বিষয়বস্তু নিয়ে অভিযোগ যাচাই করার আগেই ইউটিউব থেকে নাটকটি সরিয়ে নেওয়া হলো।
নাটকটিতে কী আছে? কেন এমন প্রচারণা? জানা গেছে, গল্পটি মূলত একজন তরুণ চিত্রশিল্পীকে ঘিরে। যিনি শৈশবে ট্রেন দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের। এ কারণে তিনি জানতে পারেননি তার বাবা-মা কে কিংবা কোন ধর্মের মানুষ। বড় হয়েছেন শিশু আশ্রমে।
নাটকের গল্প এমন হলেও দর্শকদের অভিযোগ, এই নাটকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টরা দেশে ‘ট্রান্সজেন্ডার সংস্কৃতি’ প্রমোট করছে।
বিষয়টি নিয়ে কালের কণ্ঠ’র সঙ্গে কথা বলেন নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু। তিনি, ‘আমি কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে আসিনি। আমি আসলে একজন একা মানুষের গল্প বলতে চেয়েছি। এ ধরনের ঘটনা কিন্তু আমাদের চারপাশে ঘটে। এটা হরমোনজনিত শারীরিক ঘটনা। আমি দেখানোর চেষ্টা করেছি হরমোনজনিত কারণে একজন মানুষের ক্রমেই একা হয়ে যাওয়ার গল্প। কিন্তু এ বিষয়টিকে অনেকেই ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। আমি এর জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত এবং হতাশ। এই সরল গল্পটি যদি আমরা না গ্রহণ করি, তাহলে নতুন গল্প বলব কেমন করে?’
নির্মাতা জানান, ‘রূপান্তর’ নাটকটি ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় উন্মুক্ত করা হয় ইউটিউবে। রাতে বেশ কিছু দর্শকের পক্ষ থেকে আপত্তি পেয়ে সেটি ১৬ এপ্রিল সকালে তুলেও নেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও রক্ষা হয়নি।
এদিকে নাটকটিতে ভুলবশত বিজ্ঞাপন প্রচার হয়েছে দাবি করে দুঃখ প্রকাশ করেছে ইলেকট্রনিক পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। বিবৃতিতে বলা হয়, “সম্প্রতি ‘রূপান্তর’ শিরোনামের ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ভিত্তিক একটি নাটকে ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজের বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ওয়ালটনের অনেক ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীর মনে আঘাত লেগেছে। ওয়ালটন প্রকৃতপক্ষে উক্ত নাটকটি তৈরির সঙ্গে সংযুক্ত ছিল না। বিজ্ঞাপনী সংস্থার মাধ্যমে নাটকের ব্র্যান্ডিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনী সংস্থাকে কম্পানির নীতি অনুযায়ী গাইডলাইন দেওয়া আছে। কিন্তু তার পরও ‘রূপান্তর’ শিরোনামের ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ভিত্তিক নাটকটিতে ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজের বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়েছে। উক্ত বিষয়ের ব্যাপারে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ অবহিত ছিল না। ওয়ালটন দেশের মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো কর্মকাণ্ডে কখনো সম্পৃক্ত থাকে না। অনাকাঙ্ক্ষিত এই বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ মর্মাহত এবং সম্মানিত ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে। এ ধরনের ঘটনা যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”