অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বহুল কাঙ্ক্ষিত ও সর্বোচ্চ প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষিত হয়েছে। জনতার ঘর নামক পৌর মেয়রের বাসভবন প্রাঙ্গণে জেলার বিশিষ্ট জনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ২২ জুন বুধবার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেন পৌর মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁঞা। এটি ছিল বর্তমান পরিষদের প্রথম বাজেট ঘোষণা ও পৌরসভার ৪৫ তম বাজেট এটি।

 

লক্ষ্মীপুর পৌরসভায় পানি সংকট, অনুন্নত ড্রেনেজ ও অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা রেখেই ১১৪ কোটি ৮৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯২৬ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। মাসুম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদরের একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন।

 

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন- সাবেক এমপি ও পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্যা, জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ নূর-এ-আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) পলাশ কান্তি নাথ, রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এম আলাউদ্দিন, লক্ষ্মীপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি হোসাইন আহম্মদ হেলাল, মিজানুর রহিম, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মাহবুবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার বশির মাস্টার, উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হাসান পলাশ, মুক্তিযোদ্ধা মফিজুর রহমান মাষ্টার ও ফরিদা ইয়াসমিন লিকার প্রমূখ। 

 

বাজেট বিবৃতি থেকে জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে লক্ষ্মীপুর পৌরসভায় ১১৫ কোটি ৮৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯২৬ টাকা বাজেট ধরা হয়েছে। এরমধ্যে ৪৩ কোটি ৯৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা রাজস্ব খাতে ও উন্নয়ন খাতে ৭০ কোটি ২৫ লাখ টাকা আয় ধরা হয়েছে। এছাড়া প্রারম্ভিক স্থিতি ৮৫ লাখ ৩৩ হাজার ৯২৬ টাকা ধরা হয়েছে। বাজেটে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৪ কোটি ৮৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯২৬ টাকা। উদ্ধৃত ধরা হয়েছে ৩৬ লাখ ৫১ হাজার ৬২৬ টাকা।

 

বাজেটে উপস্থিত কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর পৌর এলাকার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডেই পানি সংকট রয়েছে। প্রতিদিনই পানি নিয়ে কষ্ট করতে হয় বাসা বাড়িতে। অনুন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে কলেজিয়েট স্কুল রোড থেকে আজিজিয়া মাদ্রাসা সড়ক, মিয়া বাড়ি সড়ক, বাজার রোড, মিয়া আবু তাহের সড়ক, সোনালী কলোনীসহ বিভিন্ন এলাকায় একটু বৃষ্টিতেই হাটু পরিমাণ পানি জমে চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়। পৌরসভার অধীনস্ত অভ্যন্তরী অধিকাংশ সড়কেই খানাখন্দে ভরা। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও নিজস্ব পৌরভবন নেই। এ বাজেট জনবান্ধব হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

 

অভিযোগ রয়েছে, সাবেক মেয়র এমএ তাহের পৌর আধুনিক বিপনী বিতান নির্মাণ করতে গিয়ে পৌর ভবন ভেঙে ফেলেন। এরপর তিনি পৌর সুপার মার্কেটের চতুর্থ তলা ভাড়া করে কার্যক্রম চালিয়েছেন। সেখান থেকে গত ২০ জুন পৌরসভা সরিয়ে লক্ষ্মীপুর উত্তর তেমুহনী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম আ ন ম ফজলুল করিমের মার্কেটে (ইউনিক ভবন) নেওয়া হয়েছে। সেখানেই কার্যক্রম চলছে। তবে সেখানে সেবাগ্রহীতারা সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানান সমস্যার সম্মুখিন হতে পারেন।

 

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া বাজেট সভায় বলেন, নিজস্ব জমি না থাকায় পৌর ভবনের উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না। একই সমস্যায় ওয়াটার ট্রিটম্যান্ট প্ল্যান্ট স্থাপন ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের জন্য আবাসন করতে পারছি না। এরজন্য প্রায় ৫ একর ভূমির প্রয়োজন। এজন্যই উন্নয়নমূল কাজ করতে কষ্টসাধ্য হচ্ছে।