টানা বৃষ্টি ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা। পৌরসভাসহ ১৩টি ইউনিয়নে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট।

বন্ধ রয়েছে সরকারি স্বাস্থ্যসেবাও। সকালে মহাসড়কে হাঁটু সমান পানি থাকলেও সন্ধ্যায় মহাসড়ক থেকে নেমেছে পানি।

 

বুধবার (২১ আগস্ট) রাত থেকে সম্পূর্ণ চৌদ্দগ্রাম উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। ধীরগতিতে চলছে মোবাইল ইন্টারনেট।

ফলে বেশ কিছু এলাকার মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিকেলে উপজেলার কাশিনগর এলাকায় একটি ব্রিজ ভেঙে পানিতে ভেসে যায়। 

 

বৃহস্পতিবার বিকেল সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো পানিবন্দি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিচ্ছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিতরণ করা হচ্ছে শুকনা খাবার। 

 

কাশিনগর ইউনিয়ন বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান জানান, বিকেলে উপজেলার কাশিনগর ইউনিয়নের রানীর বাজার জয়মঙ্গলপুর যাতায়াতের ব্রিজ ভেঙে গেছে। 

চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার বাসিন্দা গাজী কাজল বলেন, উপজেলার সব গ্রামের বাড়িঘরে পানি, লাখ লাখ মানুষ এই মুহূর্তে পানিবন্দি। সবাই খাবার ও সুপেয় পানির সংকটে ভুগছে। অনেকেই শিশু বাচ্চা নিয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দায়মুক্ত হয়েছে। খাবার ও উদ্ধারের জন্য মানুষের ডাকে তেমন সাড়া দিচ্ছে না।  

 

মিয়া বাজার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম লোকমান হোসাইন বলেন, মহাসড়কে যানবাহন খুব কম। মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম অংশে পানি সকালে থাকলেও বিকেলে থেকে কমা শুরু হয়েছে।
 
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, যে পরিমাণ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছে, সবাইকে একসঙ্গে সহায়তা করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। পর্যায়ক্রমে গুরুত্ব অনুসারে সেবা দেওয়া হচ্ছে। 

হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি খাইরুল আলম জানান, বিকেলে মহাসড়কে চৌদ্দগ্রাম অংশের পানি কিছুটা কমলেও ফেনীর লালপোল এলাকায় বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।