ঢাকা: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘বাংলা নববর্ষ-১৪৩০’ উদযাপনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা স্মারকের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন মনিপুর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক খালিদ জাহান।

আবেদনকারীর আইনজীবী আজিম উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘আগামী রবিবার বিচারপতি সরদার রাশেদ জাহাঙ্গীর ও বিশ্বজিৎ দেবনাথের দ্বৈত বেঞ্চে রিট আবেদনটির শুনানি হতে পারে।’ 

গত ১১ এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ উদযাপনে স্মারক নির্দেশনা জারি করেন। ওই স্মারকে তিনটি কর্মসূচি নির্ধারণ করে দিয়ে তা উদযাপনে নির্দেশ দেওয়া হয়।

কর্মসূচি তিনটি হচ্ছে- নববর্ষ-১৪৩০ উদযাপন অনুষ্ঠান আবশ্যিকভাবে জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ গান পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু করতে হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎসবমুখর পরিবেশে ও যথাযথ আড়ম্বরে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে। ইউনেসকো কর্তৃক ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’-কে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ‘Intangible Cultural Geritage’-এর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে প্রচার করতে হবে। সকালে আবশ্যিকভাবে শিক্ষার্থীদের নিয়ে র‌্যালি করতে হবে। নতুন কারিকুলামের সাথে সমন্বয় করে ষষ্ঠ, সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পাঠ্যপুস্তকভিত্তিক ‘বৈচিত্র্যে ভরা বৈশাখ’ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে এবং বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকরা এ কার্যক্রম মূল্যায়ন করবেন।

 

রিটকারীর আইনজীবী বলেন, ‘সংবিধানের ১২ ও ৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দুই নম্বর কর্মসূচিটি ধর্মীয় স্বাধীনতার সাথে সাংঘর্ষিক। র‌্যালির নামে মঙ্গল শোভাযাত্রা করতেই বলা হয়েছে চিঠিতে (নির্দেশনা স্মারকে)। যে কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের এই চিঠি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে। আদালত রুল জারি করলে সে রুলের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত চিঠিটির কার্যকারিতা স্থগিত চাওয়া হয়েছে রিটে।’

আগামী রবিবার রিট শুনানির আগে তো চিঠি (নির্দেশনা স্মারক) কার্যকর হয়ে যাবে। তখন রিটের কার্যকারিতা থাকবে কি না জানতে চাইলে আইনজীবী আজিম উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘রিটটি ফাইল করতে করতে আদালতের দিনের কর্মঘণ্টা শেষ হয়ে যায়। আদালত রবিবার শুনবেন বলেছেন। দেখা যাক কী হয়।’ 

শিক্ষাসচিব, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও সহকারী পরিচালককে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।