ঢাকা: শুরুতে ডিজিটাল সনদ ও পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) পাচ্ছেন ১৩ জেলার ৩৭ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা। তবে আগামী দুই মাসের মধ্যে দুই লাখ বীর মুক্তিযোদ্ধার সবাইকে ডিজিটাল সনদ ও আইডি কার্ড দেয়া হবে।
রোববার (২৬ জুন) মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ তথ্য জানান মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সনদ ও আইডি কার্ড প্রদান, চিকিৎসা সেবা প্রদান, সরকার প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধাসংক্রান্ত বুকলেটের মোড়ক উন্মোচন এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী বলেন, আমি আনন্দের সঙ্গে আপনাদের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জানাতে চাই, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বহুল প্রত্যাশিত ডিজিটাল সনদ এবং আইডি কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছি। প্রথম পর্যায়ে আমরা ১৩টি জেলার ৩৭ হাজার ৯১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ডিজিটাল সনদ ও আইডি কার্ড বিতরণ করছি। জেলাগুলো হচ্ছে- গোপালগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নড়াইল এবং গাজীপুর।
তিনি বলেন, বাকি জেলাগুলোর প্রিন্টিং কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। আগামী আগস্ট মাসের মধ্যে বাকি সবার কাছে ডিজিটাল সনদ ও আইডি কার্ড পৌঁছাতে পারব, ইনশাআল্লাহ।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধার সনদ ও আইডি কার্ড আমরা পেয়েছি। একসঙ্গে বিতরণ করা সম্ভব নয়। আমরা ধাপে ধাপে পৌঁছে দেবো। সবার কাছে পৌঁছে দিতে দুই মাসের বেশি লাগবে না। তবে মৃত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের কাছে শুধু সনদ পৌঁছে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, সনদ ও আইডি কার্ড উপজেলায় পাঠিয়ে দেয়া হবে। সেখান থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংগ্রহ করতে হবে।
সনদ ও আইডি কার্ডে ১৪ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, টাকা জাল করা যতটা কঠিন, এর চেয়ে বেশি কঠিন হবে সনদ ও আইডি কার্ড জাল করা।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যেসব সেবা প্রদান করছে, তা নিয়ে এ মন্ত্রণালয় বুকলেট প্রকাশ করেছে, যা আপনাদের কাছে দেয়া আছে। এতে সেবাপ্রাপ্তি যেমন সহজ হবে, জনগণও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা সম্পর্কে জানতে পারবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী বলেন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় হাসপাতাল এবং ঢাকার ২২ বিশেষায়িত হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য এরই মধ্যে ১৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া আছে। হাসপাতালগুলো অতিরিক্তি অর্থ চাহিদা দিলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা নীতিমালা অনুযায়ী সবধরনের চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আরও বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবগত করতে চাই, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচন খুব শিগগির অনুষ্ঠিত হবে। আপনারা জানেন আদালতে রিট থাকায় নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। এখন নির্বাচনের সব বাধা দূর হয়েছে।
সমন্বিত তালিকা আমাদের প্রস্তুত আছে। নির্বাচন কমিশনও গঠন হয়েছে। আশা করছি, নির্বাচন কমিশন দ্রুতই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে।