ঢাকা: বিএনপির শাসনামলে শিক্ষায় বাংলাদেশ পিছিয়ে যায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৯৬ সালে আমাদের একটা প্রকল্পও ছিল নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলব। প্রত্যেকটা জেলা যেন নিরক্ষরতামুক্ত হয় সে জন্য কয়েকটি জেলাকে নিরক্ষরতামুক্ত ঘোষণাও করেছিলাম। দুর্ভাগ্যের বিষয়, ২০০১ সালে আমরা আর সরকারে আসতে পারিনি। এরপর বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসলে সেসব প্রকল্প আর কার্যকর হয়নি।
আজ বুধবার সকালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের সময় তিনি এ কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, সরকার দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চায়। এর প্রধান হাতিয়ার শিক্ষিত জনগোষ্ঠী। তাই সরকার শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সরকার শিক্ষাকে বহুমুখীকরণ করেছে। সারা বাংলাদেশে, বিশেষ করে বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যাতে আমাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি। ফলে শিক্ষার হারও বেড়েছে।
সরকার মাদরাসা শিক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তো সবার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা অনেক মাদরাসা এমপিওভুক্ত করে দিয়েছি। শিক্ষকদের সরকারি চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি।
মাদরাসায় পড়ুয়াদের জন্য প্রযুক্তি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষা যাতে তারা নিতে পারে। কারণ মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে পরে ছেলে-মেয়েরা কোথায় গিয়ে কাজ করবে? সে জন্য তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ বা তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা-এসব কারিগরি ক্ষেত্রে যাতে তারা আরো প্রশিক্ষণ নিতে পারে সেই সুযোগ সৃষ্টি এবং তাদের উৎসাহিত করা দরকার। তাতে তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা পাস করতে পারেনি তারা যেন মন খারাপ না করে। সামনে ভালো করার জন্য নতুন করে যেন উদ্যোগ নেয়। আমাদের ছেলেমেয়েরা কেন ফেল করবে?
তিনি বলেন, আমি দেখলাম পাসের হারে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। এর মানে ছেলেদের পড়াশোনায় আরো মনোযোগী হওয়া দরকার। আমাদের ছেলেমেয়েরা খুব মেধাবী, একটু সুযোগ পেলে তারা অসাধ্য সাধন করতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নিয়ম করেছিলাম ফলাফল ৬০ দিনের মধ্যে দিতে হবে। এবার আপনারা ৬০ দিনের আগেই দিয়েছেন। তাই সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী সম্মিলিত ফলাফলের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। পরে একে একে ১১টি শিক্ষা বোর্ড- ৯ টি সাধারণ বোর্ড, একটি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড এবং একটি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা নিজ নিজ বোর্ডের ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান।