কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহারকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চিঠিটা ঠিক হয়নি বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী মেহেরুন্নেসা বাহার। তার দাবি চিঠির ভাষাটা একেবারেই ঠিক ছিল না।
মঙ্গলবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় কুমিল্লা ক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ দাবি করেন।
কুমিল্লা ক্লাবে আ ক ম বাহার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করার দাওয়াত পেয়ে সাংবাদিকরা সেখানে যান। তবে বাহার না এসে তার স্ত্রী গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। চিঠিটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে মনে করেন মিসেস বাহার।
বাহারপত্নী বলেন, আপনাদের সঙ্গে ওনার দেখা করার কথা ছিল। আপনাদের সঙ্গে মতবিনিময় করার কথা ছিল। ওনার মনে হয়েছে, যেহেতু উনি নির্বাচনী কোনো কর্মকাণ্ডে ছিলেন না, সেজন্য এখানে আসেননি। তাই আমি আপনাদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে এসেছি।
তিনি বলেন, উনি কুমিল্লা-৬ আসনের এমপি। এখানে কোনো সমস্যা হলে সবার আগেই তিনি আসবেন। তাই না? উনিতো কোনো প্রচারে ছিলেন না। উনি এমপি, ওনার ঘরে থাকবেন। ঘরতো বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। মহানগর পার্টি অফিস কীভাবে বন্ধ করবেন? সভাপতি কি লুকিয়ে থাকবেন?
রাত পোহালেই বুধবার (১৫ জুন) অনুষ্ঠিত হবে কুসিক নির্বাচন। এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। এ সিটিতে ভোটগ্রহণ হবে সম্পূর্ণ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে।
নির্বাচনে মেয়র পদে ছয়জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত আরফানুল হক রিফাত, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. রাশেদুল ইসলাম, স্বতন্ত্র হিসেবে কামরুল আহসান বাবুল, মো. মনিরুল হক সাক্কু (বিএনপি নেতা ও দুইবারের মেয়র), মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন ও মাসুদ পারভেজ খান। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাসুদ পারভেজ খান প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। অর্থাৎ মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে পাঁচ প্রার্থী।
এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর মিলে ১৪০ প্রার্থী আছেন ভোটের মাঠে। নির্বাচনে ৫ নম্বর ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডে দু’জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
কুসিকের ২৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০জন। এদের মধ্যে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন নারী ভোটার ও পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১২ হাজার ৮২৬ জন। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে দু’জন। ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে, ১৬ হাজার ৪৭৪ জন। আর সবচেয়ে কম ভোটার রয়েছে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে, ৩ হাজার ৮৯৪ জন।
২০১৭ সালের ৩০ মার্চ সর্বশেষ কুসিক নির্বাচন হয়েছিল। নির্বাচিত করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ওই বছর ১৭ মে। এক্ষেত্রে ভোটগ্রহণ করার শেষ সময় ছিল চলতি বছরের ১৬ মে। কিন্তু বিগত কমিশন বিদায়ের সময় ঘনিয়ে আসায় আর তফসিল দেয়নি। ফলে অতি অল্প সময়ের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে এই সিটি পরিচালনায় দায়িত্ব দিতে হয়েছে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে। নির্বাচনের পর নতুন মেয়র দায়িত্ব গ্রহণ করা পর্যন্ত তিনি করপোরেশন পরিচালনা করবেন।
২০১৭ সালের নির্বাচনে বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু দ্বিতীয়বারের মতো এ সিটিতে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কুসিকের প্রথম নির্বাচনেও ২০১২ সালে তিনি জয়লাভ করেছিলেন। প্রথমবার বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় সাক্কু স্বতন্ত্র থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। পরের বার বিএনপির টিকিটে ধানের শীষ প্রতীক নিয়েও জয়লাভ করেন। এবার বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে ও আজীবন দল থেকে বহিষ্কার করায় সাক্কু হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। দু’টি পৌরসভাকে একীভূত করে ২০১১ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠন করে সরকার।