গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম স্বচক্ষে দেখতে পাওয়ার কথা জানিয়ে পুরো নির্বাচন বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। আর সেই সিদ্ধান্তে ওপর সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবদের সাধুবাদ ও সমর্থন পেলেন তিনি।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনে সাবেকদের সঙ্গে আয়োজিত এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সিইসি হাবিবুল আউয়াল এমন তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গাইবান্ধায় আমরা যে অ্যাকশনটা নিয়েছি- তারা বলেছেন এটা সঠিক হয়েছে। আইনগতভাবে ও সাংবিধানেকভাবে ঠিক হয়েছে। তারা আমাদের মুরব্বিজন, গুরুজন হিসেবে পরামর্শ দিয়েছেন- সততার সঙ্গে, সাহসিকতার সঙ্গে আমাদের এগিয়ে যেতে।

সিইসি বলেন, আজ আমাদের পক্ষ থেকে আমরা কোনো বক্তব্যই দিইনি; তাদের শুনেছি। সার্বিক বিষয়ে কথা হয়েছে। আমরা তাদের ডেকেছিলাম, এটা সত্য গাইবান্ধাতে যে একটা ঘটনা ঘটে গেল আমাদের প্রয়োজন ছিল আরও এনলাইটেন্ড হওয়া; তাদের তরফ থেকে কোনো গাইডেন্স আছে কি না, কীভাবে মূল্যায়ন করেছেন অতটুকু জেনেছি।

তিনি বলেন, এটা ক্রিটিক্যাল ছিল। প্রথমবারের মতো বড় ধরনের কোনো পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশন নিয়েছে এবং এটা যথেষ্ট সেনসেশন ক্রিয়েট করেছে সর্বমহলে। এটা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য হয়েছে।

ভোট বন্ধ করার পর সাবেকদের কাছ থেকে নতুন করে মূল্যায়ন কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, মূল্যায়নের খুবই প্রয়োজন রয়েছে। যে কোনো বিষয়ে বিচারক হিসেবে আমরা সহকর্মীদের জিজ্ঞেস করি- বিষয়টা ঠিক হয়েছে কি না। আমরা শুদ্ধ সিদ্ধান্ত নিয়েছি-কি নেইনি। তাদের অভিমত, আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারপরেও এটা সঠিক নাও হতে পারে। কোর্টে গিয়ে কেউ চ্যালেঞ্জ করেন; উনারা যদি বলতেন সঠিক সিদ্ধান্ত নেননি, তখন আমাদের সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার প্রয়োজন হতো।

তিনি বলেন, তারা সবাই একমত পোষণ করেন, আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়েছে, বলেছেন এগিয়ে যান। আমরা উনাদের কাছে যে গাইডেন্স, পরামর্শ পেয়েছি, বক্তব্য শুনেছি তা আমাদের এডুকেটেড করেছে, ইন্সপায়ার করেছে।

গাইবান্ধায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ইসির উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ হবে- সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি.জে (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের এমন মন্তব্যের বিষয়ে সিইসি বলেন, অপেক্ষা করেন। আমরা তদন্ত কমিটি করেছি। রিপোর্টটা আসুক। তারপর আপনারা দেখেন আমরা কোনো পদক্ষেপ নিই কি না। ওয়েট অ্যান্ড সি। কাজেই একটু অপেক্ষা করতে হবে।

সাবেক এই আইন সচিব আরও বলেন, ইভিএম নিয়েও পক্ষে-বিপক্ষে কথা হয়েছে। অধিকাংশই পক্ষে বলেছেন। এটা নিয়ে জনমনে একটা নেগেটিভ পারসেপশন রয়েছে। এ পারসেপশনটা দূর করতে হবে।

বুধবার বেলা ১১টা থেকে তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে সাবেক সিইসি আব্দুর রউফ, কে এম নূরুল হুদা, কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ এবং সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রি.জে (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, মো. শাহনেওয়াজ; সাবেক ইসি সচিব ড. মোহাম্মাদ সাদিক, মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ, সিরাজুল ইসলাম, হেলাল উদ্দীন আহমেদ, এমএম রেজা এবং ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী ও মোখলেছুর রহমান অংশ নেন।