যথাযথ প্রক্রিয়া অনুরসরণ না করে বাংলাদেশে এখনো নাগরিকদের ঠেলে দেওয়ার (পুশ ইন) বিষয়টি ভারতকে স্মরণ করিয়ে দিতে আবারও চিঠি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি এখনো পুশ-ইন হচ্ছে। সশরীরে এটি ঠেকানো সম্ভব নয়।’

 

মঙ্গলবার (৩ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আজ বা আগামীকাল তাদের আরেকটি ‘সংক্ষিপ্ত’ (কূটনৈতিক নোট) চিঠি দেবো।’

 

চিঠিটির ভাষা নরম হবে, নাকি এটি প্রতিবাদপত্র হবে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি নির্ভর করে কে কীভাবে নেবেন তার ওপর।’

উপদেষ্টা বলেন, পুশ ইন ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে এবং বাংলাদেশ চেষ্টা করছে যাতে নির্ধারিত প্রক্রিয়ার বাইরে কিছু না ঘটে।

তিনি জানান, বাংলাদেশকে একটি তালিকা দিয়েছে ভারত। যাচাই-বাছাই শেষে বাংলাদেশ কিছু মানুষকে গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের অবস্থান হলো, প্রতিটি ঘটনা আলাদাভাবে যাচাই করা হবে। শুধু প্রমাণ সাপেক্ষে বাংলাদেশি নাগরিকদেরই গ্রহণ করা হবে।

 

তিনি আরও জানান, কনস্যুলার ইস্যুগুলোর জন্য একটি নির্ধারিত প্রক্রিয়া রয়েছে এবং সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই বাংলাদেশ বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।

ক্ষমতচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হস্তান্তর নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।

ভারত সম্প্রতি জানিয়েছে, প্রায় দুই হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক দেশটিতে রয়েছে, যাদের পরিচয় যাচাইয়ের পর বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো দরকার।

 

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সম্প্রতি বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে তাদের জাতীয়তা যাচাই করতে বলেছি। বর্তমানে দুই হাজার ৩৬০ জনের একটি তালিকা রয়েছে যাদের প্রত্যাবাসন প্রয়োজন।’

নয়াদিল্লিতে নিয়মিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এদের অনেকেই ইতোমধ্যে কারাদণ্ড ভোগ করেছেন। তাদের অনেক ক্ষেত্রে জাতীয়তা যাচাই করা বাকি রয়েছে। এটি ২০২০ সাল থেকে ঝুলে আছে। অর্থাৎ প্রায় পাঁচ বছর হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, এই যাচাই প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করতে বাংলাদেশের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ভারত। যাতে যাদের ফেরত পাঠানো দরকার, তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো যায়।

 

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘তারা (বাংলাদেশ) যেন দ্রুত এই প্রক্রিয়া শেষ করে।’

তিনি আরও বলেন, ভারতে যারা অবৈধভাবে অবস্থান করছেন—তারা বাংলাদেশি হোক বা অন্য কোনো দেশের নাগরিক হোক—তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।