নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ জানান, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে সম্ভাব্য সময়ের কথা বলেছেন, সে অনুযায়ী প্রস্তুতিমূলক কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন তারা।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর নির্বাচন ভবনে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন সচিবের সঙ্গে কারিগরি সহায়তার বিষয়ে বৈঠক করে তারা।
এরপর সাংবাদিকদের কাছে নির্বাচনের সময়সীমা সম্পর্কে বলতে গিয়ে এ কথা জানান ইসি সচিব।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ২০২৫ সালের শেষ অথবা ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা মনে করি যে এই বছরের মাঝামাঝি সময়ে অর্থাৎ জুলাই-আগস্টের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব।’
নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আখতার আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ইসি আনুষ্ঠানিকভাবে অবগত নয়।
নির্বাচন প্রক্রিয়ার জন্য ইউএনডিপির কাছে কমিশনের সহায়তা চাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, ‘এই সহায়তার মধ্যে রয়েছে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার সংক্রান্ত প্রযুক্তি, সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগ উপকরণের উন্নয়নের মতো কিছু বিষয়। প্রতিনিধিদলটি এসব প্রয়োজনীয়তা পর্যালোচনা করতেই (বাংলাদেশে) এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গেও কথা বলবেন। এরপর ১০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনের বিষয়ে একটি প্রস্তাব তারা আমাদের সামনে উপস্থাপন করবেন।
উদাহরণ টেনে আখতার আহমেদ বলেন, ‘ইউএনডিপি বাড়ি বাড়ি গিয়ে (ভোটারের) তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করবে না, বরং ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য তথ্য প্রক্রিয়াকরণে সহায়তা করবে তারা।’
ইসির সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, ‘জাতিসংঘ কারিগরি সহায়তা দেওয়ার আগেই নির্বাচন কমিশন জাতিসংঘকে চিঠি দিয়ে সহায়তা চেয়েছে। ফলে এ ব্যাপারে আমাদের প্রয়োজনীয়তা নিরূপণ করা দরকার।’
এ লক্ষ্যে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আজ (মঙ্গলবার) নিউ ইয়র্ক থেকে আসা ইউএনডিপির একটি প্রতিনিধিদল প্রথমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন এবং পরে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী বলেন, ‘অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জাতিসংঘ কী ধরনের কারিগরি সহায়তা দিতে পারে—সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কিছু সুপারিশ করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আসলে (মূল্যায়নের) প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছি এবং নির্বাচন কমিশনের চাহিদা কী—তা বোঝার চেষ্টা করছি। ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিষয়ে তারা (ইসি) ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে এবং কমিশন কিভাবে নির্বাচন আয়োজন করতে চায়—তা বোঝার চেষ্টা করছি আমরা।’
ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ শুরু হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেখানে কিছু প্রযুক্তিরও প্রয়োজন হতে পারে।’
গোয়েন লুইস বলেন, ‘আইটি সক্ষমতা উন্নয়ন থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজের জন্য কারিগরি সহায়তা চেয়ে অনুরোধ করেছে ইসি। অপতথ্যের বিস্তৃতি রোধেও সহায়তা চেয়েছে তারা।’
এ ধরনের আরো কী কী প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তা বুঝতে ১০ দিনের মধ্যে মূল্যায়ন শেষ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এরপর নির্বাচন কমিশনের সামনে সেগুলো উপস্থাপন করা হবে।’