রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি নিজেদের পরিবর্তনের জন্য নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, ‘বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াই শুধু অন্তর্বর্তী সরকারের নয়, এটি আমাদের সবার দায়িত্ব। এটির বাস্তবায়নে নাগরিক সমাজের সহযোগিতা অপরিহার্য।’
আজ শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে সিএসও অ্যালায়েন্স আয়োজিত ‘নাগরিক সমাজ : অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক জাতীয় মতবিনিময়সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘প্রথাগত সরকারের থেকে বর্তমানে সব কিছু ভিন্নভাবে পরিচালিত হচ্ছে। বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সরকার ও বিভিন্ন কমিশন আলাপ-আলোচনা করছে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ‘রাষ্ট্রে নাগরিক সমাজ ও বেসরকারি সংস্থার অবদান অনেক।
বিগত সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে কর্মরত বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার ফান্ড আটকে দেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমাদের অনেক এনজিওর ফান্ড আটকে দেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, ‘টানা ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকা একটি সরকার, সেই সরকার নেতিবাচক একটি ধারা আইনগতভাবে প্রতিষ্ঠা করে গেছে। সেগুলো নিয়ে এখন কথা বলার যথেষ্ট উপযুক্ত সময়। গত কয়েক বছর নানা ধরনের ঘটনায় সিভিল সোসাইটিকে যেভাবে প্রতিবাদ করা প্রয়োজন ছিল, সেভাবে কিন্তু করা সম্ভব হয়নি।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশে যে ক্ষমতার রাজনীতি, সেখানে এখনো যে সংকীর্ণতা; তাতে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে চ্যালেঞ্জ নিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ করতে হয়। যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তারাই আমাদের চরম শত্রু ভেবেছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে অসহযোগিতা করেছে। আবার হয়রানির জন্য মিথ্যা মামলাও করেছে। আবার সেই দল ক্ষমতার বাইরে থেকেছে; বিরোধী দলে গেছে, তখন আমাদের কর্মকাণ্ডগুলোকে সাধুবাদ জানিয়েছে। গত ১৫ বছরের যে ইতিহাস, সেখানেও কিন্তু ধারাবাহিক সেই প্রক্রিয়াই চলেছে। তাদের এমন কঠোরতা ও উদারতার কারণ হলো, এক পক্ষের ক্ষমতায় টিকে থাকতে হবে এবং অন্য পক্ষকে ক্ষমতায় যেতে হবে। অথচ অনিয়ম-দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, সুশাসনের ঘাটতির যে চিত্র, তা তুলে ধরে এনজিও এবং সিএসও খাতের সংস্থাগুলো মূলত সরকারকে সঠিক কাজটি করতে সহায়তা করে থাকে। সেটি কিন্তু বিগত সরকারগুলো অনুধাবন করতে পারেনি।’