দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভারতের অবস্থান জন-আকাঙ্ক্ষার বিপক্ষে বলেই দেশে ‘ভারতীয় পণ্য বর্জন’ কর্মসূচি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জয়নুল আবদিন ফারুক। আজ শুক্রবার সকালে শেরেবাংলানগরে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এই মন্তব্য করেন।
‘ইন্ডিয়া আউট ক্যাম্পেইন’ ও ‘ভারতীয় পণ্য বর্জন’ নিয়ে যে প্রচারণা চলছে, সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘‘দেখুন ১৯৭১ সালের যুদ্ধে আমি রাণাঙ্গনের একজন স্বাধীনতার যোদ্ধা। ভারত আমাদের বন্ধু….এখনো আমরা তাদের বন্ধু ভাবি।
‘‘বাংলাদেশের জনগণ প্রত্যাশা করে যে দেশে গণতন্ত্র আছে, বিশেষ করে বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশ বাংলাদেশে ৭ জানুয়ারি যে নির্বাচন হয়েছে সেটা অগণতান্ত্রিক হয়েছে… জনগণের কাছে অগ্রহণযোগ্য হয়েছে। তাই বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা যে ভারত যদি ওই নির্বাচনে সঠিকভাবে সমর্থন দিত জনগণের প্রতি... জনগণের বিপক্ষে অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের জনগণ এবং বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে ভারতীয় পণ্য বর্জন করছে। আমাদের দলের মুখপাত্র রিজভী আহমেদ, তিনি দীর্ঘদিন এই দলের মুখপাত্র… উনি এই দলের দীর্ঘদিনের মুখপাত্র হিসেবে বলেছেন, আমরা সংহতি প্রকাশ করেছি।
গত বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে নয়, আওয়ামী লীগের পক্ষে। সে জন্য জনগণ তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে ভারতীয় পণ্য বর্জন করে, জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ জানাচ্ছে ভারত হটাও আন্দোলনের পক্ষে। জনগণের এখন একটাই কথা- মদদদাতা শক্তির উৎস ভারতীয় পণ্য কিনব না।
‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে ঢেউ দৃশ্যমান, তাতে মনে হয় দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছে। সুতরাং জনগণের দল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিসহ ৬৩টি গণতন্ত্রকামী দল এবং দেশপ্রেমিক জনগণ ভারতীয় পণ্য বর্জনের এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করছে।’
নবম সংসদে বিরোধী দলের প্রধান হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক বলেন, ‘মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলন চলছে। আমরা আমাদের দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করছি… জিয়া পরিষদসহ অন্য অঙ্গসংগঠনের মতো বিএনপিও সারা বাংলাদেশে শক্তি অর্জন করছে। ইতিমধ্যে আমাদের নেতাকর্মীরা কারাগার থেকে বেরিয়ে আসছেন, আরো বেরিয়ে আসবেন।
‘আমরা সরকারকে বলব, এই রমজান মাসে মানুষ যে দুই বেলা পেট ভরে খেতে পারে, সাহরি ও ইফতার করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সিন্ডিকেট বন্ধ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর ইতিহাসে আছে, কোনো স্বৈরাচার ক্ষমতায় থাকার জন্য রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহার করে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতাকর্মীদের দাবিয়ে রাখে। সেই দাবিয়ে রাখার পরও কোনো ইতিহাসে নাই কোনো স্বৈরাচার চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতায় থাকে। সব গণতান্ত্রিক দলের আন্দোলন অবশ্যই সফল হবে।’
জিয়া পরিষদের ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের নিয়ে জয়নুল আবদিন ফারুক বেলা সাড়ে ১১টায় শেরেবাংলানগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন এবং প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
এই সময় জিয়া পরিষদের অধ্যাপক এমতাজ হোসেন, অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদসহ জিয়া পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।