ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এখনই জোটের আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত করতে চায় ১৪ দলের শরিকরা। কিন্তু আওয়ামী লীগ জানিয়েছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর শরিকরা কে কয়টি আসন পাবে তা চূড়ান্ত করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ইস্কাটনে ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে আগামী ৩০ অক্টোবর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে ১৪ দলের জনসভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একটি সূত্র জানায়, বৈঠকের শুরুতেই ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এখনই শরিকদের কয়টি আসন দেওয়া হবে, তা ফায়সালা করার প্রস্তাব দেন।
রাশেদ খান মেনন বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন জোটগতভাবে হবে, এটা চূড়ান্ত হয়ে গেছে।
মেননের বক্তব্যে সমর্থন দেন জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, শরিকদের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি থাকলে সমস্যা হয়।
আসন বণ্টনের বিষয়টি দ্রুত সম্পন্ন করার পক্ষে মত দেন তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারিও। এ সময় ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, ‘নেত্রী (শেখ হাসিনা) আগেও বলেছেন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আসন ভাগাভাগি করা হবে। ফলে এ বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারছি না। আওয়ামী লীগ সভাপতি যেকোনো সময় ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি বলেন, দরকার হলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে জোটের শরিকদের একটা বৈঠক হতে পারে। সেখানে আসন বণ্টনের বিষয়ে আলোচনা করা হোক।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ করছি, জাতীয় নির্বাচন ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে বিভিন্ন তত্পরতা, এটা আমাদের দেশের মানুষের কাম্য নয়। আমাদের দেশের একটা পক্ষের সংবিধানবিরোধী কার্যক্রমে মনে হয়, তারা বিদেশি চক্রান্তকারীদের অনুসরণ করছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যেকোনো অপতত্পরতা প্রতিহত করতে প্রস্তুত ১৪ দল।’
আমু বলেন, ‘আমাদের দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে। এই ধারা অব্যাহত থাকা দরকার। আর এ জন্য সংবিধান অনুযায়ী আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে আমাদের জোটের সমর্থন আছে। আমরা চাই, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হোক। ১৪ দলীয় জোট ঐক্যবদ্ধভাবেই নির্বাচনে অংশ নেবে।’ আমির হোসেন আমু বলেন, ‘নির্বাচনসহ যা-ই হোক, সংবিধানের মধ্যে থেকে হতে হবে। সংবিধানবিরোধী যেকোনো তত্পরতা আমরা প্রতিহত করব।’
আমু বলেন, ‘ফিলিস্তিনে গণহত্যা চলছে। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। আমরা এই গণহত্যার নিন্দা জানাই। অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘের কাছে আহ্বান জানাই। পাশাপাশি এই ক্ষতি পুষিয়ে তুলতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আমাদের আবেদন রইল।’
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ প্রমুখ।