ঢাকা: জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণের সময় আদালতের এজলাস কক্ষে হইচই ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে কিছু সময়ের জন্য সাক্ষ্যগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।

 

ঢাকা মহানগরের সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিচারক মো. আসাদুজ্জামান মঙ্গলবার বেলা ২টার পর সাক্ষী আব্দুল মতিনের জবানবন্দি গ্রহণের সময় বিএনপিপন্থী একদল আইনজীবী এজলাস কক্ষে ঢুকে পড়েন। এ সময় তারা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে হট্টগোল শুরু করেন।

বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আদালত কক্ষে ঢুকে বিশৃঙ্খলা শুরু করলে বাদীপক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় সাক্ষী চার্টার্ড অ্যাকাউন্টটেন্ট আব্দুল মতিনকে লক্ষ্য করে ফাইলপত্র ছুঁড়ে মারা হয়। এতে তিনি নাকে আঘাত পান।

এ ঘটনার পর বিচারক এজলাস ছেড়ে চলে যান। এর ফলে সাক্ষ্যগ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিচারক এজলাসে উঠে আরও দু'জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

এর আগে আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা ধাওয়া দিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের বের করে দিলে তারা আদালত চত্বরে স্লোগান দেন। এ সময় আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরাও আদালতের বাইরে অবস্থান নিয়ে পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আদালত চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিকেল ৬টা পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য আদালতের সামনে অবস্থান করছিলেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জানান, এজলাস কক্ষে হাতাহাতির এক পর্যায়ে জবানবন্দি রেকর্ড করা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে আবার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। বুধবার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রেখেছেন আদালত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আইনজীবীরা জানান, সাক্ষ্যগ্রহণের সময় এজলাসের ভেতরে ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়।

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান এবং তার মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। এর পরের বছর তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। গত ১৩ এপ্রিল তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

এ মামলায় সোমবার তিন ব্যাংক কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হলেন- এবি ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার ইমরান আহমেদ, প্রধান কার্যালয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম মুসা করিম ও সিনিয়র সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট ওবায়দুর রশিদ খান। এ নিয়ে মামলাটিতে চার্জশিটভুক্ত ৫৬ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো।