উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফরাসি ক্লাব পিএসজি।
ইন্টারকে দাঁড়াতেই দেননি পিএসজি ফুটবলাররা। একপেশে খেলে গোল করেন ডিজায়ার দুয়ো ২টি, আশরাফ হাকিমি, কিতা কাভারেস্কাইয়া ও মায়লুলু ১টি করে।
সাবেক বার্সেলোনা কোচ লুইস এনরিকের হাত ধরে গৌরবের ট্রেবল জয় করলো পিএসজি। ফ্রেঞ্চ কাপ, ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানের পর জিতলো ইউরোপ সেরার মুকুট চ্যাম্পিয়নস লিগ। মিউনিখের আলিয়াঞ্জ এরেনায় যতবার পিএসজির ফুটবলাররা গোল করছিল ততবার প্যারিসের আইফেল টাওয়ারে আলোর ঝলকানি দেখা গিয়েছিল।
ইউরোপের সেরা এ ক্লাব প্রতিযোগিতার ফাইনালের ইতিহাসে এর আগে কোনো দল ৫ গোল ব্যবধানে জেতেনি। সে অর্থে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে রেকর্ড গড়েই জয় পেয়েছে ফরাসি ক্লাবটি।
ফ্রান্সের দ্বিতীয় দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয় করলো পিএসজি। তাদের আগে ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে প্রথম ফরাসি দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় করেছিল মার্চেই। সেবার ফাইনালে তারা এই মিউনিখেই হারিয়েছিল আরেক ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলানকে (১-০ গোলে)।
প্রমাণ হলো মেসি, নেইমার ও কিলিয়ান এমবাপেদের ছাড়াই ইউরোপের সেরা ক্লাব হতে পারে পিএসজি। ১৪ বছর আগে কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপ পিএসজি কেনার পর কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢেলেছে একটি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের আশায়।
হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে তারা দলে নিয়েছিল বিশ্বসেরা তিনজন- লিওনেল মেসি, নেইমার ও চিলিয়ান এমবাপের মতো ফুটবলারকে; কিন্তু তারা যেটা করতে পারেনি, সেটা তাদের ছাড়াই করে দেখাল পিএসজি। অথচ, এক বছর আগে এমবাপেও যখন সর্বশেষ তারকা হিসেবে পিএসজি ছেড়ে যায় তখন অনেকেই ভেবেছিল প্যারিসের ক্লাবটির সোনালি দিন শেষ হয়ে গেল; কিন্তু সেটাকে ভুল প্রমাণ করলেন ওসমান ডেম্বেলেরা।
ম্যাচ শুরুর আগেই ইন্টার মিলান সমর্থকরা সমবেত কণ্ঠে ক্লাব সঙ্গীত গাচ্ছিল, 'দেয়ারস অনলি ইন্টার...'। কিন্তু ম্যাচ শুরুর পর থেকেই তাদের সবার মুখ বন্ধ। কারণ, লুইস এনরিকের পিএসজি ফুটবলারদের ছোট ছোট পাসের সামনে শুরু থেকেই বালির বাঁধের মতো ধ্বসে পড়তে থাকে ইন্টার মিলানের শক্তিশালী ডিফেন্স।
ম্যাচের ৬০ শতাংশ বলের দখলে ছিল পিএসজির। যে ৪০ শতাংশ ইন্টারের দখলে ছিল, তা ছিল কেবল পিএসজির আক্রমণ ঠেকানোর বলগুলোই। পুরো ম্যাচে মাত্র দুইবার পিএসজির পোস্ট লক্ষ্যে শট নিতে পেরেছিল ইন্টার। আটবার শট নিয়েছিল পিএসজি, যার পাঁচটিই জড়িয়ে যায় ইন্টারের জালে।
ম্যাচের শুরু থেকেই একক আধিপত্য দেখাতে থাকে পিএসজি। যার ধারাবাহিকতায় ১২তম মিনিটে অসাধারণ এক সাজানো গোছানো আক্রমণ থেকে দুর্দান্ত গোল করেন আশরাফ হাকিমি। ছোট বক্সের একেবারে বাম পাশ থেকে স্লাইড করে পোস্টের সামনে পাস দেন ভিতিনহা। ফাঁকায় দাঁড়ানো পিএসজির রাইট ব্যাক আশরাফ হাকিমি চলন্ত বলে আলতো করে পা লাগিয়ে জড়িয়ে দেন ইন্টারের জালে।
২০ মিনিটে দুর্দান্ত গোল করেন ১৯ বছর বয়সী ডিজায়ার দুয়ে। প্রথমার্ধে ২-০। বিরতির পর ৬৩ মিনিটে দুয়ে তৃতীয় (নিজের দ্বিতীয়) গোলটি করার পর ম্যাচে শুধু আনুষ্ঠানিকতাই বাকি ছিল। ৭৩ মিনিটে খিচা কাভারেস্কাইয়া ও ৮৬ মিনিটে মাইয়ুলু গোল করে পিএসজির জয় নিশ্চিত করেন।